ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের শিক্ষক নিয়োগের প্রশ্নফাঁস বিষয়ক বেশ কিছু অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ইবি থানায় একটি জিডি হয়েছে। অডিও ফাঁস হওয়ার ঘটনায় দুর্নীতির অভিযোগ এনে উপাচার্যকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে অপসরণের দাবিতে ভিসি কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করছে অস্থায়ী কর্মচারী পরিষদ।
এ সময় আন্দোলনকারী ব্যক্তিদের ‘ভিসির দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’, ‘দুর্নীতিবাজ ভিসির অপসারণ চাই’ বলে শ্লোগান দিতে দেখা যায়। আন্দোলনকারী ব্যক্তিরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মী বলে জানা যায়।
আজ শনিবার দুপুর ১২টায় প্রশাসন ভবনের দ্বিতীয় তলায় উপাচার্য অফিসের সামনে রাসেল জোয়ারদার ও টিটু মিজানের নেতৃত্বে অস্থায়ী কর্মচারী পরিষদের প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ জন কর্মচারী এ আন্দোলনে অংশ নেন।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপাচার্যের সঙ্গে সাংবাদিকতা বিভাগের চাকুরিপ্রার্থী অলিউল রহমানের একটি কথোপকথন ফাঁস হয়। সেখানে উপাচার্যকে বলতে শোনা যায়, টাকা দিয়ে হলেও দুইজন প্রার্থী সংগ্রহ করার কথা। এ ছাড়া নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন বিষয়ক আলাপন করতে শোনা যায়। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার ইবি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান। পরে আরও একটি আইডি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র, কর্মকতা-কর্মচারী ও ছাত্রলীগ সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করা অডিও ফাঁস হয়।
অন্যদিকে, এ ঘটনায় আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত অডিওতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কথোপকথন শিক্ষক সমিতির দৃষ্টিগোচর হয়েছে। উক্ত অডিওতে উপাচার্য মহোদয়ের মন্তব্যে শিক্ষক সমিতি হতবাক ও বিস্মিত। এ ধরনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজের তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে তার এ ধরনের বক্তব্য শিক্ষক সমিতিকে ক্ষুব্ধ ও হতাশ করেছে। প্রকাশিত অডিওর বক্তব্যের বিষয়ে অনতিবিলম্বে উপাচার্য মহোদয়ের অবস্থান জানানোর অনুরোধ করা হয়।
এ ছাড়া এ ঘটনায় আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরাম নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। একইসঙ্গে পরিবেশিত অডিও উপাচার্যের কিনা সে সম্পর্কে ব্যাখা প্রদানসহ তার অবস্থান পরিষ্কার করার জন্য আবেদন জানান।
এ বিষয়ে অস্থায়ী কর্মচারী পরিষদের সভাপতি টিটু মিজান বলেন, ‘এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দুর্নীতির ঘটনা দেখতে পাই। এ ভিসি অচল, দুর্নীতিবাজ। তাকে সরাসরি একজন চাকরি প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলার অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া যায়। তা ছাড়া ছাত্রলীগ, ছাত্র ও শিক্ষকদের সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করন। আমরা এই ভিসির অপসারণ চাই। দুর্নীতিমুক্ত ক্যাম্পাস চাই।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, ‘উপাচার্য মহোদয়ের কণ্ঠের সাদৃশ্যের ন্যায় কথোপকথনের অডিও ফেক আইডির মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এই বিষয়ে ইবি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।’