ঢাকা২৭শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সব খবর

কুবিতে ১৭ বছরেও হয়নি স্থায়ী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, উদাসীন প্রশাসন

হাছিবুল ইসলাম সবুজ, কুবি
সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২ ১:৩০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়(কুবি) প্রতিষ্ঠার ১৭ বছরেও নির্দিষ্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সমস্যার সমাধান করতে পারে নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নির্দিষ্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ময়লা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক পরিবেশ যেমন দূষিত হচ্ছে তেমনি নানান জটির রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের। এতে তারা দোষছেন প্রশাসনের উদাসীনতাকে৷

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে কূপে, ব্যবসা শিক্ষা অনুষদের সামনেও পেছনের অংশে, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ও বিজ্ঞান অনুষদের সংযোগ সেতুর নিচের দক্ষিন অংশে, প্রশাসনিক ভবনের পেছনের পশ্চিম ও দক্ষিন প্রান্তে, শহীদ মিনারে, ক্যাফেটেরিয়ার চারপাশে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হলসহ অনুষদের সামনে ও পেছনে পরিনত হয়েছে ময়লার ডাম্পিং ।

এছাড়াও চারদিকে পড়ে আছে খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ, পলিথিন, বোতলসহ নানা রকমের ক্ষতিকর বর্জ্য। এতে বৃষ্টিতে ভিজে যেমন পঁচা দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে তেমনি ড্রেনেজে পড়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা পঁচে পানির কালো রং ধারন করেছে। এ থেকে মশা-মাছিসহ নানান রকমের পোকামাকড়ের বংশবিস্তার ঘঠছে।
এছাড়া হলগুলোতেও নেই যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচটি আবাসিক হলে ডাস্টবিন থাকলেও সেগুলো শিক্ষার্থীদের চাহিদা তুলায় অপ্রতুল। এরমধ্যে বঙ্গবন্ধু হলের সম্প্রসারিত অংশে নেই ময়লা মেলার ডাস্টবিন এতে আবাসিক শিক্ষার্থী ময়লা ফেলে নিচের ফাঁকা অংশে পরিনত করেছে ময়লার বাগাড়।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল হালিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ডিপার্টমেন্টে কোথাও ময়লা ফেলার মতো ঝুড়ির ব্যবস্থা না থাকায় খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ ক্লাসের সামনের ফাঁকা জায়গায় ফেলতে হয়। এছাড়াও ক্যাম্পাসে ময়লা ফেলার মতো নির্দিষ্ট ডাস্টবিন নেই। শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে এখানে-সেখানে ময়লা ফেলে। এতে করে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে এবং ক্যাম্পাস তার সৌন্দর্যতা হারাচ্ছে।‘’প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি ক্যাম্পাসে দ্রুত ডাস্টবিন বসানো হোক।’’
লোক প্রশাসন বিভাগের ১২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রোকেয়া আক্তার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দর ও মনোরম পরিবেশ বজায় রাখার জন্যে নির্দিষ্ট ডাস্টবিন থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ন। কিন্তু দুংখজনক হলেও সত্যি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ বছরেও নির্দিষ্ট বর্জ্য ব্যবস্থা করতে পারে নি কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে প্রশাসন বরাবরের মতোই দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে। যারা এই কাজের সাথে সম্পৃক্ত হয়তো তারা বিষয়টা গুরুত্বের সহিত দেখছে না। কর্তৃপক্ষের উচিত এই বিষয়গুলোর প্রতি খেয়াল রাখা। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করলেও প্রশাসন বরাবরই বিষয়টি এড়িয়ে গেছে। যত দ্রুত সম্ভব কর্তৃপক্ষের সুনির্দিষ্ট ডাস্টবিন স্থাপন করা।

ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা থেকে বিভিন্ন জটিল রোগব্যাধি তৈরি হতে পারে জানিয়ে কুবির মেডিকেলের ডেপুটি চীফ মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদুল হাসান খান বলেন, উন্মুক্ত জায়গায় ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকায় পরিবেশ দূষনের পাশাপাশি স্বাস্থ্যের জন্যে অনেকটা ক্ষতিকর। বিশেষ করে শ্বাসকষ্ট রোগীদের জন্য এছাড়াও চর্মরোগ,জ্বর-ঠান্ডা, কাশিসহ নানান রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ থেকে পরিত্রাণের জন্যে সুনির্দিষ্ট ডাস্টবিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রকৌশল দপ্তর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এস. এম. শহিদুল হাসান বলেন, ডাস্টবিন বসানোর জন্যে আর্থিক বরাদ্দের জন্য আমরা ফাইল জমা দিয়েছি। দীর্ঘদিন হয়েছে তবে সেই বিষয়ে কোনো খোঁজ খবর নেই। তিনি আরও বলেন, যেখানে দশটা স্পটে তিন ধরনের ত্রিশটা ডাস্টবিন থাকবে। আমরা আর্থিক বরাদ্দের অনুমোদন পেলেই কাজ করা শুরু করব।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, এই বিষয়ে আমার থেকে উপাচার্য ভালো বলতে পারবে। এই বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।

সার্বিক বিষয় জানার জন্য উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোনো রকম উত্তর পাওয়া যায়নি।