কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরধারীতার অভাবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ( কুবি) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের ফলক থাকলেও নেই ভাস্কর্যের নাম। উদ্বোধনের ৬ বছরে একাধিকবার ভাস্কর্যের নামসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলি মুছে গেছে। বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যে ফলকে নাম মুছে যাওয়া নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলেও তোয়াক্কাই করছেন না কর্তৃপক্ষ। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবি কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকেই ভাস্কর্যটি অবেহলায় পড়ে আছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য অবস্থিত। ভাস্কর্যের নাম ফলক থাকলেও নাম মুছে গেছে দীর্ঘ দিন ধরে অথচ সেই বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো রকম ভ্রুক্ষেপ নেই। সংবাদমাধ্যমে নাম ফলকের মুছে যাওয়ার বিষয়টি অনেকবার প্রকাশিত হলেও কোনো রকম স্থায়ী ফলাফলের ভূমিকা দেখা যায় নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী আল- আমিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর নাম ফলক মুছে যাওয়া এটা জাতি হিসেবে দু্ংখজনক ঘটনা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যে সেটা আরও হতাশাজনক। আমরা মুখেই বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে স্বীকার করি। সত্যিকার অর্থে অন্তর থেকে আমরা বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে ধারন করতে পারি নাই। যদি অন্তর থেকে আমরা বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে ধারন করতে পারতাম তাহলে এতদিন নাম ফলক মুছে থাকতো না। এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের আরও মনোযোগী হওয়া উচিত।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের এই বিষয়ে কোন ধরণের নজরধারীতা নেই। বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক জায়গা থেকে প্রশাসনের উচিত এই বিষয়গুলোতে নজর দেয়া। আমরা এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশানের সাথে কথা বলবো। এভাবে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটি থাকতে পারেনা।
এসেস্ট শাখার ডেপুটি-রেজিস্ট্রার মো. মিজানুর রহমান বলেন, বৃষ্টির কারনে অনেক সময় লেখা মুছে যায়। আমি কর্তৃপক্ষের সাথে এই বিষয় নিয়ে কথা বলবো।
প্রকৌশল দপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এস.এম শহিদুল হাসান বলেন, কোনো কিছু পুনরায় মেইনটেইন্সের প্রয়োজন হলে সেটা হস্তান্তর করা হয় সংশ্লিষ্ট শাখাতে। নাম ফলকের রং দেওয়া আমাদের দপ্তরের কাজ নয়। তবে মাঝে মাঝে নাম ফলকে রং করা হয় তবে কোন দপ্তর থেকে করা হয় সেই বিষয়ে আমার জানা নেই।
রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী বলেন, প্রকৌশল দপ্তর এবং কর্তৃপক্ষের সাথে এই বিষয় নিয়ে কথা বলবো।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ভাস্কর্যের নাম ফলক দৃশ্যমান থাকা উচিত। আমি এই বিষয়ে কথা বলবো যেনো লেখাটা দৃশ্যমান করা হয় ।
এই বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড.এ এফ এম আবদুল মঈনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
উল্লেখ্য, ভাস্কর্যটি ২০১৭ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. আলী আশরাফ উদ্বোধন করেন। ভাস্কর্যটি মৃণাল হক নির্মাণ করেছেন বলে জানা যায়।