অতর্ধশতকে জাবিসাস,মুক্তবাকের উচ্ছ্বাস এই স্লোগানকে ধারন করে দেশের প্রথম ক্যাম্পাস ভিত্তিক সাংবাদিক সংগঠন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (জাবিসাস) সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়েছে।
শনিবার (১৮ মার্চ) সকাল ১০ টায় ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে কেক কাটার মাধ্যমে দিনব্যাপী অনু্ষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নুরুল আলম।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র থেকে আনন্দ র্যালি বের হয়ে তা ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে গিয়ে শেষ হয়।ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে ‘তারুণ্যের বোঝাপড়ায় বাংলাদেশের সাংবাদিকতা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিআইবি’র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ ও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান প্রতিমন্ত্রী ডাঃ এনামুর রহমান। এসময় জাফর ওয়াজেদ বলেন, সিন্ডিকেট রিপোর্ট সাংবাদিকতার জন্য খারাপ। ঢাকার সাংবাদিকতার মান খুবই নিন্ম। একজন একটা রিপোর্ট করলে ওই একই রিপোর্ট আরো তিন চারজন করে। ফলে সিন্ডিকেট সাংবাদিকতা তৈরি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেকে আছে যাদেরকে বলা হয় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাংবাদিক। কিন্তু তাদের লেখা খুঁজে পাওয়া যায় না৷ কেউ না লিখলে সে সাংবাদিক হয় কীভাবে? আমাদের দেশে সাংবাদিক বাড়লেও সাংবাদিকতার মান বাড়েনি৷ তিনি বলেন, আমাদের দেশে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগ রয়েছে। কিন্তু সাংবাদিকতার মান বাড়েনি৷ আমাদের দেশে এখন অজস্র গণমাধ্যম কিন্তু এমন কোনো রিপোর্টার নেই যার রিপোর্ট পড়ার জন্য পাঠক অপেক্ষায় থাকে। আর বর্তমানে প্রযুক্তির এমন বিকাশ ঘটেছে যে এই সাংবাদিকতা কোথায় গিয়ে দাড়াবে এখনই স্পষ্ট বলা যাচ্ছে না।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এমপি বলেন, সাংবাদিকতা আছে বলেই সমাজে দায়বদ্ধতা আছে। সাংবাদিকেরা সমাজের আয়না হিসেবে কাজ করেন।
এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোতে স্বচ্ছতা আনতে সাংবাদিকদের ভূমিকা অনেক। তাদের বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য উপকারী। আমি সর্বদা বস্তুনিষ্ঠ ও গঠনমূলক সাংবাদিকতার পক্ষে। সাংবাদিকদের বিচারবুদ্ধি দিয়ে গঠনমূলক সমালোচনা করতে হবে। এতে করে আমাদের ভুলভ্রান্তি থাকলে তা আমরা সংশোধ করতে পারবো৷ তবে যারা সাংবাদিকতা করে তাদের অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে সাংবাদিকতা করতে হয়। সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে অনেক প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়৷ এমনটা আমরা মুক্তিযুদ্ধের সময়ও দেখেছি যখন সাহসী সাংবাদিকরা মুক্তিযুদ্ধের কঠিন সময়ে সংবাদ সংগ্রহ করে আমাদের সামনে মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতা তুলে ধরেন।
এসময় সুবর্ণজয়ন্তীর স্মৃতি স্মারক “প্রতিধ্বনি” এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
এরপর বিকাল তিনটায় ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের জাবিসাস কার্যালয়ে সংগঠনটির বর্তমান ও সাবেক সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে ‘জাবিসাসের মেলবন্ধন’ শীর্ষক স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে কেবল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েরই নয় বাংলাদেশের একমাত্র সাংবাদিক সংগঠন হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির যাত্রা শুরু হয়।