কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান হলের সম্প্রসারিত অংশে নিরাপত্তাকর্মী না থাকায় বারবার চুরির ঘটনা ঘটছে। ইতিমধ্যে হলের শিক্ষার্থীদের মূল্যবান জিনিসসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী ও সরঞ্জামাদি চুরি হয়ে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এর জন্য প্রশাসনের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন তারা। এদিকে হলের সম্প্রসারিত অংশ এখনো বুঝে না পাওয়ায় দায়ভার নিচ্ছে না হল কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে হলটি দেখা যায়, ৫ তলা বিশিষ্ট হলটির মোট ৫৮টি বেসিনের পানির কল ২১টিই চুরি হয়ে গেছে। এছাড়া বাথরুমের কলগুলোও নেই। বিচ্ছিন্নভাবে পড়ে আছে বেসিনের সংযোগস্থল। সর্বশেষ গত সোমবার রাতে সম্প্রসারিত ভবনের ৪র্থ তলায় ৪১২ নং কক্ষে লোকপ্রশাসন বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. শাকিল আহম্মদের মোবাইল চুরির ঘটনা ঘটে।
হলটির মোট ৫৮টি বেসিনের পানির কলের ২১টিই চুরি হয়ে গেছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আব্দুল হালিম বলেন, বর্ধিত অংশে যে সকল সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়েছে তা পুরাতন ব্লকের তুলনায় অনেক নিম্ন মানের। গুনগত মানের দিক নজর না দেওয়ায় অতি অল্প সময়ের মধ্যে অনেকগুলো লাইট এবং ওয়াশরুমের দরজা নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। সরঞ্জামগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘমেয়াদি সম্পদ অতি অল্পসময়ের মধ্যে যদি নষ্ট হয়ে যায় তা হলে এর দায়ভার কে নিবে?
আরেক শিক্ষার্থী খাইরুল বাশার সাকিব বলেন, নিরাপত্তা কর্মী না থাকায় বহিরাগত অনায়সে প্রবেশ করছে যা শিক্ষার্থীদের ল্যাপটপ, মোবাইলসহ মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে তেমনি শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুকিও রয়েছে। হল প্রশাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। তা না হলে যে কোনো বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর আমরা স্মারকলিপি প্রধান করেছি কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় কোনো দৃশ্যমান ফলাফল পাওয়া যায়নি।
হলের এমন পরিস্থিতির বিষয় জানতে চাইলে হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম বলেন, হলের নিরাপত্তার কর্মী চেয়ে প্রশাসন বরাবর লিখিত দেওয়া হয়েছে। আশা করি হলের সমস্যাগুলো অতি দ্রুত সমাধান হবে। চুরির বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, হস্তান্তরের পূর্বে কোনো সরঞ্জামাদি চুরি হলে সেটার দায়ভার আমাদের না। হস্তান্তর করার সময় আমরা সরঞ্জামাদি ঠিকঠাক বুঝে নিবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন বলেন, হলের এই সমস্যা নিয়ে আমি হলের প্রভোস্টের সাথে আলাপ করব। এ বিষয় আমার জানা নেই তাই কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।
প্রসঙ্গত,২০১৬ সালের ৩১ মে ১৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা বাজেটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সম্প্রসারিত অংশের কাজ দেওয়া হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্টার লাইট সার্ভিস লিমিটেডকে। প্রায় ৭ বছর পর গত ৩০ জুন হলটি হস্তান্তর করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। তবে হল প্রশাসন বলছে হল তারা বুঝে পায়নি।