কাঠফাটা আর তীব্র গরমে ক্রান্তি দূর করার জন্য শহরের মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকত ঠান্ডা পানির শরবত, তরমুজ, লাচ্ছি, ডাব এবং আইসক্রিম বিক্রেতারা। শীতের আগমনে এই দোকানগুলো আর দেখা মিলছে না নগরের অলিগলিতে। এই জায়গাগুলোতে এখন বিক্রি হচ্ছে বাহারি রকমের মৌসুমি পিঠাপুলি আর জানান দিচ্ছে শীত চলে এসেছে। শহরের অলিগলিতে তৈরি হচ্ছে চিতই, ডিম চিতই,ভাঁপা পিঠা ও পাটিসাপটাসহ নানান রকমের পিঠা। এই সব পিঠা খেতেও বেশ সুস্বাদু।
গুড়, নারকেল ও চালের গুড়া দিয়ে তৈরি ভাঁপা পিঠা, পুলি পিঠাসহ বাহারি সব পিঠা তৈরি হয় এ সকল দোকানে। চিতই পিঠার সাথে মরিচ, রসুন, সুটকি, সরিষা, ধনে পাতাসহ নানা রকমের সুস্বাদু ভর্তা জিহ্বায় জল আনছে ভোক্তাদের। পথচারীরা গরম পিঠার স্বাদ নিয়ে আনন্দ উপভোগ করছে তৃপ্তিসহকারে। হরেক রকমের পিঠার স্বাদ নিজেদের পাশাপাশি অনেকে আবার পরিবারের সদস্যদের জন্যও বাসায় নিয়ে যাচ্ছে । দোকানগুলোতে পিঠা খেতে প্রতিদিনেই ভীর জমাচ্ছে নানান বয়সের মানুষজন।
কুমিল্লার খন্দকার মার্কেটের সামনে থেকে পিঠা থতে খেতে মাহমুদা আক্তার হিমু নামের এক ক্রেতা জানালেন, আমাদের দেশে শীত মানেই বাঙালির পিঠা খাওয়ার উৎসব এটা আমাদের ঐতিহ্য। শীত আসবে পিঠা খাবে না, এমন বাঙালি খুব কমই পাওয়া যাবে। শীতের রাতে গরম পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। যদিও এক সময় রেওয়াজ ছিল শীত আসলেই পিঠা খাওয়ার জন্য শহর থেকে গ্রামে যাওয়ার তবে এখন কিছুটা ম্নান হয়েছে।
মনোহরপুর গণী ভূঁইয়া ম্যানশনের সামনে হাবিব নামে এক পিঠা বিক্রেতা বলেন, বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের দাম বেশি হওয়ায় আগের তুলনায় লাভ অনেক কম হয়। প্রতিদিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ২০০- ৩৫০ পিঠা বিক্রি হয়। তবে সন্ধ্যা নামলেই পিঠা খাওয়ার দুম পড়ে একটু বেশি। একাদিক পিঠা বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায় শীতের উপর পিঠা বিক্রি অনেকাংশ নির্ভর করে থাকে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ রোড সংলগ্ন আরেক পিঠা বিক্রেতা হাসি দিয়ে বলেন, শীতের শুরুতে আমার প্রতিদিন ৪০০০ থেকে ৫০০০ টাকার মতো বিক্রি হতো তবে শীত এখন কিছুটা কম পরায় বিক্রিও কিছুটা কমতে শুরু করেছে। আমাদের দেশে শীতের সময়ে এই বাহারি পিঠা নিয়ে হাজির হয় ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়িকরা। অক্টোবরে শেষের দিক থেকে মার্চের শুরু পর্যন্ত চলে এ ব্যবসা। তারপর ফিরে আসে তাদের আগের পেশায়।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কোটবাড়ি এলাকায় পিঠা বিক্রি করছেন মো. মনির। জিজ্ঞেস করতেই জানালেন, ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সুন্দর ডিজাইনের পিঠা বানানোর বিকল্প হয় না। নারকেলের সাথে গুড় মিশিয়ে স্তরে স্তরে পিঠা সাজিয়ে রেখেছেন। কেউ কেউ ৫-৭ বছর ধরে এই পিঠার ব্যবসা করে আসছেন। লাভ ভালো হওয়ায় সামনের দিনগুলোতেও বিক্রি করার ইচ্ছে পোষণ করছেন তারা।