রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রলীগ নেতাসহ চারজনের বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীকে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তাঁদের বন্ধুদের মারধরের খবর পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
গত শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী দুই ছাত্রী আফসানা আক্তার আশা ও আফরোজা আক্তার আলো। তাঁরা যমজ বোন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
অভিযুক্ত তিন ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসান, রাব্বিউল ইসলাম রুপক ও ফিরোজ মাহমুদ
অভিযুক্তরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপক্রীড়া সম্পাদক রাব্বিউল ইসলাম রূপক, শহীদ সোহারাওয়ার্দী হলের সহসভাপতি মেহেদী হাসান, জিয়াউর রহমান হলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ফরহাদ হাসান।
অভিযোগে ভুক্তভোগী ছাত্রীরা বলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তাঁরা চার বন্ধুসহ পরিবহন মার্কেটের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় আফসানা আক্তার আশা রাস্তায় পড়ে থাকা একটি নুড়ি পাথরে লাথি মারেন। সেই পাথর সামনে থেকে আসা ছাত্রলীগ নেতাদের একজনের পায়ে লাগে। তাৎক্ষণিক আশা ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতাদের একজন তাদের বলেন, ‘যমজ না হলে মার্ডার করে ফেলতাম’।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের বন্ধুরা এর প্রতিবাদ করলে তাঁরা ফোন করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপক্রীড়া সম্পাদক রাব্বিউল ইসলাম রূপককে ডেকে আনেন। পরে তাঁর নেতৃত্বেই আরও ১৪ থেকে ১৫ জন তাঁর চার বন্ধুকে মারধর করেন। এতে নাজমুস সাকিব শুভ ও রাকিবুল্লাহ রাকিব নামে তার দুই বন্ধু আহত হন। শুভকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা রাব্বিউল ইসলাম রূপককে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
অভিযুক্ত আরেক ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসান বলেন, ‘হুমকির অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। তবে সেদিন তাঁদের সঙ্গে কাটাকাটি একপর্যায়ে একটু ধাক্কাধাক্কি হয়। তবে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। এতে আমাদের ছাত্রলীগের কয়েকজনের মধ্যে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। ইতোমধ্যে দুই পক্ষের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। আমি বর্তমানে ঢাকায় আছি। ক্যাম্পাসে গিয়ে বিষয়টি সমাধান করব।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। আজকে নবীনবরণ হলো। এখন এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।