প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ১৭ বছরেও শিক্ষার্থীদের হাতে স্মার্ট আইডি কার্ড বা উন্নতমানের পরিচয়পত্র তুলে দিতে পারেনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রশাসন। কয়েক বছরের অধিক সময় ধরে পরিচয়পত্রের তৈরি করার কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। এছাড়াও স্নাতক ২০২১-২২ বর্ষের ভর্তির ৭মাস পার হলেও পাননি পরিচয়পত্র। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন।
অন্যদিকে পরিচয়পত্র না থাকায় ব্যাংক একাউন্ট খোলাসহ বিভিন্ন স্থানে নিজেদের পরিচয় নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, অতিদ্রুত পরিচয়পত্র যেন সম্পন্ন করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকের আটটি সেমিস্টারের জন্য চার বছরের পরিচয়পত্র দেয়া হয়। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথম বর্ষের অর্ধ বছর এবং স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের দু’বছর হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কেউ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিচয়পত্র পাননি বলে জানান।
এদিকে একাধিক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ভর্তির সময় পরিচয়পত্রের জন্য ১০০ টাকা করে নেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু সেই মানের পরিচয়পত্র কেউ পেয়েছে, আবার কেউবা পাননি। এর বিপরীতে স্মার্ট আইডি কার্ডের জন্য এপ্রিলের শেষদিকে পূনরায় আবেদনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে গুনতে হয়েছে আরো ১৫০ টাকা। অথচ সেই আবেদনের ৫ মাসের অধিক সময় পেরিয়ে গেলেও সাড়া নেই কর্তৃপক্ষের।
পরিচয়পত্রের বিষয়ে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শাকিল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ বছরেও আমরা স্মার্ট আইডি কার্ড পাইনি। এদিকে আমার অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবুও আইডি কার্ডের হুদিশ মিলছে না। যেখানে অনেক স্কুল-কলেজে ভর্তির শুরুর দিকেই উন্নতমানের স্মার্ট আইডি কার্ড প্রদান করা হয়। সেখানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় আইডি কার্ডের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র যথারীতি সোনার হরিণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
ম্যানেজমেন্ট বিভাগের স্নাতক ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নুরে আলম বলেন, আমি ব্যাংকে স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলতে গিয়েছি পরিচয়পত্র না থাকায় খুলতে পারিনি। আমরা ভার্সিটির ছাত্র হয়েও লাইব্রেরী থেকে বই নিতে পারছি না। আশেপাশে যে পর্যটনকেন্দ্র আছে সেগুলা আমাদের জন্য ফ্রি থাকলেও আইডি কার্ডের জন্য সে সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। অথচ এদিকে প্রসাশনের কোন ভ্রুক্ষেপই নেই।
এ ব্যাপারে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের স্মার্ট পরিচয়পত্রের সকল তথ্য আবাসিক হলগুলোতে পাঠিয়ে দিয়েছি। আশা করি কার্ডগুলো অতিদ্রুত প্রিন্ট প্রক্রিয়া শেষ করে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে পারবো।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ন কবির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে প্রত্যেকের জন্য একটি স্মার্ট আইডি কার্ড পাওয়া তাদের অধিকার। কেন বিশ্ববিদ্যালয় এখনও শিক্ষার্থীদের মাঝে পরিচয়পত্র দিতে পারেনি এবং আইডি কার্ডের অগ্রগতি কতটুকু তা ট্রেজারার ভালো বলতে পারবেন।